Prosthetics (প্রােসথেটিকস্)
Denture (ডেনচার) দাঁত বাধানাে।
প্রকারভেদঃ
১) পারসিল ডেনচারঃ
যখন ১টা বা তার অধিক দাঁত বাঁধাই করা হয় ।
২) কমপ্লিট ডেনচারঃ যখন কোন চোয়ালের সব কটি দাঁত বাঁধাই করা হয়। এক্ষেত্রে প্রতিটি চোয়ালে ১৪টি বাধই করা হয়। ৮ নং দা্যঁত বাঁধাই করা হয় না। অর্থাৎ দুই চেয়ালে মােট দাঁত থাকে ২৮ টি।
ডেনচার দুইভাবে তৈরী করা হয়ঃ
১) সেলফ কি ওর দিয়ে।
২) হিট কিওর দিয়ে ।
সেলফ কিওর দিয়ে আবার দুই ভাবে করা যায়ঃ
১) হাতে পাউডার ও লিকুইড আলাদা আলাদা করে দিয়ে।
২) মটার ফ্লাক্সে।
প্রথমে কম্পো বা এলাজিনেট দিয়ে ইমপ্রেসন নিতে হয়। তারপর মডেল তৈরী করতে হয় । মডেল করার জন্য প্রথমে রাবার বলে সামান্য একটু পানি নিয়ে পরিমানমত হার্ড প্লাষ্টার স্পেচুলা দিয়ে মিশাতে হয়। এমন ভাবে মিশাতে হয় যেন কোন বুদবুদ না থাকে। তাই রাবার বল আস্তে আস্তে ঝাকি দিতে হয়। যখন কাঁদার মত হয় তখন ইমপ্রেসনের মাঝে বা গর্তের একটু পাশে দিয়ে আস্তে আস্তে ঝাকতে হয় যাতে যাহাতে যাহাতে প্লাষ্টার আস্তে আস্তে দাঁতের গর্তে যায় এবং কোন বুদ বুদ না থোকে। এবং সমস্ত যায়গায় প্লাষ্টার দিয়ে কিছুক্ষন অপেক্ষা করতে হয়। অর্ডিনারি প্লাষ্টার একই ভাবে মিশিয়ে সমস্ত ইমপ্রেসন পুরু করে ঢেকে ফেলতে হয়। একটু শক্ত হলে পাশ থেকে অতিরিক্ত প্লাষ্টার ফেলে দিতে হয়। তারপর ৪-৫ ঘন্টা সময় নিয়ে মডেল খোলা ভাল। প্লাষ্টার শক্ত হলে ট্রে এর গা থেকে (ছিদ্র দিয়ে যে ইমপ্রেসন ম্যাটেরিয়াল বের হয়ে ছিল) অতিরিক্ত কম্পাে বা এলজিনেট ছেটে দিয়ে হয়। এবং আস্তে আস্তে প্লটার আলাদা করতে হয় এমন ভাবে যেন দাঁতে চাপ না লেগে ভেঙ্গে যায়। অক্ষত অবস্থায় মডেল আলাদা করতে হয়। সেটাই মডেল।
এবার মডেলের গায়ে সেপারেটিং মিডিয়া কোন্ড মােল সিল তুলা বা তুলি দিয়ে দিতে হয়। সেপারেটিং মিডিয়া শুকালে সেলফ কিওর পাউডার ও লিকুইড আস্তে আস্তে মডেলে দিতে হয়। যে জায়গায় দাত নেই সেখানে দাঁত বসিয়ে দাঁতের আশে পাশে ও (দাঁত সহ) দিতে হয়। ল্যাবিয়াল বা বাক্কাল দিকে ঠোট ও মাড়ীর সংযােগস্থল পর্যন্ত দিতে হয়। আর ভিতরের দিকে যে দাঁত বানাতে হবে সেই দাতের পাশ্ববর্তী ১/২ টি দাঁতের গােড়া পর্যন্ত দিতে হয়। পিছনের দাতের ক্ষেত্রে তার দেওয়া লাগে। সেক্ষেত্রে সেলফ কিওর দেওয়ার আগেই তার মডেলের সাথে আগেই বসাতে হয়। তারপর সেলফ কিওর দিতে হয়। এভাবে পাতলা প্লেট তৈরী করতে হয়। প্লেট বেশ পুরু যেন না হয় আবার বেশী পাতলা হলে ভেঙ্গে যাবে। সেলফ কিওর শক্ত হলে পরক্ষনেই বা ১/২ ঘন্টা পর মভেল ও প্লেটের মাঝে সিমেন্ট স্পেচুলা বা নাইফ দিয়ে চাড় দিলে ঐ দাঁতসহ প্লেট বের হয়ে আসবে । এবার প্লেটটা চারিদিকে কেটে সমান বা পরিমাপ করতে হয় তারপর পলিশ করতে হয়। তখন রোগীর মুখে দিতে হয়।
মটার ফ্লাক্সের পদ্ধতীঃ
এটা হিট কিওরের মত প্রায়। মডেল করার পর মডেলিং ওয়াক । মােম গরম করে মডেলের
উপর (সিট আকারে পাওয়া যায়) যতটুকু প্লেট হবে ততটুকু দিতে হয়। মােমের সিট যতটুকু পরু ততটুকুই দিতে হয় । এটা স্প্রিট ল্যাম্পে নরম করে লাগাতে হয়। মােমের উপর দাঁত বসাতে হয়। তারপর ফ্লাক্সের অর্ধেক অরডিনারী প্লাষ্টার মিশিয়ে অর্ধেক পূরন করে মডেল প্লাষ্টার নরম অবস্থায় ফ্লাক্সে দিতে হয়। দাঁতের মাড়ী পর্যন্ত প্রাষ্টার দিতে হয়। তার পর ১/২ ঘন্টা অপেক্ষা করে মডেল শক্ত হলে কেটে সমান করে সেপারেটিং মিডিয়া দিতে হয়। তারপর বাকী অর্ধেক ফ্লাক্স বসিয়ে সমস্ত ফ্লাক্স প্রাষ্টার দিয়ে পূরন করতে হয়। এবার ফ্লা্ক্স মর্টারে দিয়ে চাপ দিতে হয় । অতিরিক্ত প্রাষ্টার বের হয়ে যাবে ।
মর্টার সহ ফ্লাক্স পানিতে ১ ঘন্টা ফুটাতে হয়। তাহলে মােম গলে যাবে এবং প্রাষ্টারের সাথে মিশে যাবে। ঠান্ডা করে ফ্লাক্স বের করে মাঝে চাপ দিলে ফ্লাক্স আলাদা হয়ে যাবে। যে জায়গায় মােম ছিল সেখানে ফাঁকা হয়ে যাবে । এবং দাঁতটা উপরের প্লাষ্টারের সাথে লেগে থাকবে। এবার ফ্লাক্স ঠান্ডা করে সেপারেটিং মিডিয়া প্লাষ্টারের গায়ে দিতে হবে । তারপর সেলফ কি ওর পাউডার ও লিকুইড পরিমান মত মিশিয়ে নরম অবস্থায় ফ্লাক্সের ঐ ফাঁকা জায়গায় নিয়ে মর্টারে চাপ দিতে হয়। অতিরিক্ত সেলফ কি ওর পাশ দিয়ে বের হয়ে যাবে। এবার ১/২ ঘন্টা অপেক্ষা করে। ফ্লাক্স খুলে ডেনচারে চাড় দিয়ে ডেনচার আলাদা করতে হয়। তারপর ফিনিশিং করে পলিশ করতে হবে। তারপর রােগীর মুখে দিতে হবে।
হিট কি ওর (Heat cure)
পারসিয়াল ডেনচারঃ
পারসিয়াল ডেনচার বানানাের পদ্ধতী সেলফ কিওর মর্টার ফ্লাক্স পদ্ধতীর মতই। শুধু সেলফ কিওবের জায়গায় হিট কিওর মিশিয়ে দিয়ে চাপ দিয়ে মরটারসহ ফ্লাক পানিতে ১ ঘন্টা তাপ দিতে হবে তারপর
ঠান্ডা করে ক্লাক্স খুলে ফিনিশিং বা পলিশিং করতে হবে ।
কমপ্লিট ডেনচারঃ
এটা সব সময় হিট কিওর দিয়ে করা ভাল।
ধাপ সমূহঃ
১) প্রাইমারী ইমপ্রেসনঃ সাধারণত কম্পাে দিয়ে নেওয়া হয়।
২) প্রাইমারী মডেলঃ অরডিনারী পাষ্টার দিয়ে করা হয়।
৩) ডিজাইনঃ মডেলটাকে ঠিক করা। পিছনে যতটুকু প্লেট হবে সেই জায়গা বরাবর একটু খাজ করতে হয়।
৪) স্পেশাল ট্রেঃ প্রাইমারী মডেলের উপর বেস প্লেট ওয়াক্স দিয়ে প্লেট যতটুকু হবে ততটুক করতে হয়। ওয়াক্স সিট টি ল্যাম্পে গরম করে মডেলের উপর চাপ দিতে হয়।
৫) ফাইনাল ইমপ্রেসনঃ জিঙ্কঅক্সাইড ইউজেনল পেষ্ট দিয়ে স্পেশাল ট্রে এর উপর পেষ্ট দিয়ে মাফ নিতে হয়। প্রাইমারী ইমপ্রেসন এ ত্রুটি থাকলে এখানে ঠিক হয়। কারণ পেষ্ট সবজায়গা ঠিকমত প্রবাহিত হয়।
৬) ফাইনাল মডেলঃ হার্ড প্লাষ্টার দিয়ে।
৭) ডিজাইনঃ মডেলটা ঠিক করা ।
৮) ওয়াক্স প্যাটার্নঃ মডেলিং ওয়াক্স দিয়ে। মডেলের উপর মডেলিং ওয়াক্স দিয়ে যতটুকু প্লেট বানাতে হবে, যতটুকু পুরু করতে হবে (সাধারণত ওয়াক্স সিটের মত পুরু) ততটুকুই দিতে হবে। মুলত এখানে যেমন হবে প্লেটও তেমনই হবে।
৯) ফ্লাস্কিংঃ অরডিনারী প্লাষ্টার দিয়ে। প্রথমে প্লাষ্টার মিশিয়ে কাঁদার মত করে অর্ধেক ফ্লাক্স পুরন করতে হবে। নরম অবস্থায় মডেলসহ প্যাটার্ন ফ্লাক্সের মাঝে দিয়ে চেপে দাঁতের মাড়ী ও ঠোটের খাজ পর্যন্ত ঢেকে দিতে হবে। কিছুক্ষন অপেক্ষা করে শক্ত হলে কেটে সমান করতে হয়। তার উপর কোল্ড মােল সিল সেপারেটিং মিডিয়া হিসাবে তুলা বা তুলির সাহায্যে দিতে হয়। তারপর ফ্লাক্সের সবটুকু প্লাষ্টার দিয়ে পূরণ করে ঢাকনা দিয়ে মরটারে চাপ দিতে হয়। অতিরিক্ত প্লাষ্টার কেটে ফেলতে হয় ।
১০) ডি- ওয়াক্সিংঃ গরম করা । মরটার ও ফ্লাক্স গরম পানিতে ফুটন্ত অবস্থায় গরম করতে হয় ১ঘন্টা। তারপর ফুটিয়ে ঠান্ডা করে ফ্লাক্সের মাঝে চাপ দিয়ে খুলতে হয়। যে জায়গায় ওয়াক্স ছিল সেখানে ফাঁকা হয়ে যাবে ।
১১) প্যাকিংঃ সেলফ কিওর একরাইলিক রেসিন দিয়ে মরটারে চাপ দিতে হয়।
১২) কিউরিংঃ গরম পানিতে মরটার সহ ফুটাতে হবে।
১৩) ওয়াক্স রিমঃ মডেলিং ওয়াক্স দিয়ে রিম বা মাড়ী তৈরী করতে হয়। ওয়াক্স গরম করে করে লাগিয়ে রিমের মত করতে হয় ।
১৪) ভারটিক্যাল হাইটঃ দুই চোয়ালের যতটুকু উচ্চতা ততটুকু মেপে নিতে হয়।
১৫) আর্টিকুলেসনঃ মডেলটাকে আরটিকুলেটরের সাথে প্লাষ্টার দিয়ে আটকাতে হয়।
১৬) সেটিং টিথঃ দাঁত রিমের মধ্যে লাগাতে হয়। প্রথমে মাঝের থেকে শুরু করতে হয়। নিচের দাঁতের সাথে সম্পর্ক রেখে দাঁত লাগাতে হয়। উপরের চোয়াল সাধারনত নিচের চোয়ালকে ঢেকে রাখে।
১৭) ট্রায়েলঃ রােগীর মুখে লাগিয়ে দেখতে হয়।
১৮) কারবিংঃ ওয়াক্স রিম বা ওয়াক্স ভালমত পরিস্কার করে যেখানে যেমন উচু নীচু , মাড়ীর যে গঠন তেমন করতে হয়।
১৯। ফ্লাক্সিংঃ আবার অরডিনারী প্লাষ্টারে মডেল সহ দিতে হয় পূর্বের মত।।
২০) ডি-ওয়াস্কিংঃ মরটর ফ্লাক্সসহ ফুটানাে পানিতে তাপ দিতে হয় ১ ঘন্টা।
২১) পাকিংঃ হিট কিওর একরাইলিক রেজিন দিয়ে। ডি ওয়াক্সিং এর সেলফ কিওরের প্লেট নরম হয়ে গলে যাবে। দাঁত গুলো ফ্লাক্সের উপরের সেটের সাথে আটকে থাকবে। সেলফ কিওর ভালভাবে পরিস্কার করে ঠান্ডা করে সেই জায়গায় হিট কিওর একরাইলিক রেজিন মিশিয়ে নিন। উপরে চাপ দিয়ে অতিরিক্ত রেজিন পরিস্কার করে দিতে হয়।
২২) কিউরিংঃ মরটার সহ আবার গরম করতে হয়।
২৩) তারপর ঠান্ডা করে প্লাষ্টার ভেঙ্গে ডেনচার বের করে আনতে হয়।
২৪) ফিনিশিংঃ বার দিয়ে কেটে সুন্দর করতে হয়।
২৫) পলিসিংঃ তারপর স্বচ্ছ করার জন্য পলিশ করতে হয়।
২৬) সাপ্লাইঃ তারপর রােগীর মুখে দিতে হয়।
দাঁত বাঁধানাের পর উপদেশঃ
১) প্রতিদিন বাধানো দাঁত রাতে ঘুমানাের পর্বে খুলে ব্রাশ দিয়ে পরিস্কার করবেন এবং একটি বাটিতে সামান্য ডেটল/ সেভলন দিয়ে ডুবিয়ে রাখবেন।
২) দাঁত লাগানাের পর প্রথম প্রথম অসুবিধা হয় তার পর অভ্যাস হয়ে যায়। অবশ্যই মুখে পরার অভ্যাস করতে হবে।
৩) কোন কোন সেক্ষেত্রে মাড়িতে ঘাঁ হয়ে যেতে পারে। ডাক্তারের পমির্শ নিন।
0 মন্তব্যসমূহ